রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মা ও মেয়েকে হত্যার এক মামলায় দীর্ঘ ১৫ বছর কনডেমড সেলে থাকা ফাঁসির দ-প্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ইসমাঈল হোসেন বাবু ও সোনাদি। আপিল বিভাগ নির্দোষ ঘোষণা করে খালাস দেওয়া দুই আসামিকে দ্রুত কনডেমড সেল থেকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার অপর দ-প্রাপ্ত আসামি তরিকুল ইসলামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়েছে। দুই আসামির আপিল মঞ্জুর এবং তরিকুলের জেল আপিল খারিজ করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন। আদালতে খালাসপ্রাপ্ত দুই আসামির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও জেল আপিলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মেহায়মেন (এস এম) বক্স কল্লোল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
পরে বশির আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, আপিল বিভাগে খালাসপ্রাপ্ত দুই আসামির এই হত্যাকা-ের ব্যাপারে কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছিল না। শুধু দুজন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্যে বলেন, হত্যাকা-ের দিন ওই দুজনকে (ইসমাঈল হোসেন বাবু ও সোনাদিকে) তরিকুলের বড়িতে যেতে দেখেছে। আর তরিকুল এ হত্যাকা-ে জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন এবং তাদের দ্রুত কনডেমড সেল থেকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে তরিকুলের মৃত্যুদ- কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন।
২০০৬ সালের ১০ অক্টোবর রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে খুন হন মিলিয়ারা খাতুন ও তার কন্যা পারভীন। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০৮ সালে ইসমাঈল, সোনাদি ও তরিকুলকে মৃত্যুদ- দেন বিচারিক আদালত। পরে ওই আসামিদের মৃত্যুদ- অনুমোদনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি ডেথরেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে এবং রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা পৃথক আপিল করেন। ডেথরেফারেন্স ও আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। গতকাল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করে মৃত্যুদ-ের সাজা থেকে দুজনকে খালাস ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- নির্দেশ দেন।