ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, গাছতলায় পাঠদান
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা দিতে হলে মানসম্মত শিক্ষক ও সুন্দর পরিবেশের প্রয়োজন। কিন্তু প্রায়ই গণমাধ্যমে দেখা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে পরিবেশ নেই। শ্রেণিকক্ষের ভবন ফেটে গেছে। সেখানে ক্লাস চলছে আবার উন্নয়নের নামে দীর্ঘদিন ধরে মোরামত কাজের জন্য গাছতলায় পাঠদান চলছে। গতকাল আমাদের সময়ের এক প্রতিবেদন উঠে এসেছে, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের রামপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই মাস ধরে সেই পরিত্যক্ত ভবনের সামনের গাছতলায় চলছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ৯ বছর ধরে ভাড়া করা ঘরে পাঠদান করা হচ্ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে একটি একতলা ভবন করা হয়। এর পর গত ৫০ বছরেও এ বিদ্যালয়ে অন্য কোনো ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ২০১০ সালে একটি ভবন বরাদ্দ হলেও মাঠভরাটের অভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। পুরনো একমাত্র ভবনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০১৩ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, পুরনো একমাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার ৯ বছর পার হলেও নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া কেন হয়নি? দেখার কেউ নেই? ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে আছেন এবং অনেকে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধাবোধ করেন। ভবন না থাকায় লেখাপড়া করতে কষ্ট হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আশপাশের অন্য বিদ্যালয়ে চলে গেছে। অনেকে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়েছে। তা খুবই দুঃখজনক। ঝরে পড়া রোধ করতে এবং উন্নত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে ভবন নির্মাণের বিষয়ে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা কোনোভাবেই জোড়াতালি দেওয়ার খাত নয়। এটা এমন এক খাতÑ যেখানে কোনো ঘাটতি দেখা দিলে ভবিষ্যতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অন্যান্য খাতেও। তাই বলব, শুধু রামপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি চিত্রের মতো অসংখ্য স্কুল আছে। এ ধরনের সমস্যাজড়িত স্কুলভবনগুলো অতিজরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত নির্মাণ শেষ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সুন্দর পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করুন।