আল থুমামা স্টেডিয়ামে গ্রুপ-এফ’এ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় মুখোমুখি হচ্ছে বেলজিয়াম ও মরক্কো। প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে বেলজিয়াম নক আউট পর্বের পথে অনেকটাই এগিয় আছে। এদিকে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দিয়ে এক পয়েন্ট অর্জন করা মরক্কোও আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামবে।
গড়ে প্রতিম্যাচে তিনটি করে গোল করে অনেকটা সহজ বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা বেলজিয়াম টুর্নামেন্টের শুরুটাও জয় দিয়ে করেছিল। এখন তাদের সামনে এমন এক প্রতিপক্ষ যারা গত চার দশক ধরে বিশ্বকাপের বাইরে ছিল। আল রাইয়ান স্টেডিয়ামে কানাডার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতে পেনাল্টি রুখে দিয়ে থিবো কোর্তোয়া আরও একবার বেলজিয়ানদের রক্ষা করেছিলেন। আর এতেই উজ্জীতি হয়ে ৪৪ মিনিটে মিশি বাটশুয়াইয়ের গোলে শেষ পর্যন্ত তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে রবার্তো মার্টিনেজের দল। ইনজুরিতে ছিটকে পড়া রোমেলু লুকাকুর স্থান পূরণে ফেনারবাচের এই স্ট্রাইকারের ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান তিনি ঠিকই দিয়েছেন। সেদিনের ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটি তারকা কেভিন ডি ব্রুইনা। একইদিন প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সাথে মরক্কো গোলশুন্য ড্র করায় বেলজিয়ামের সামনে সুযোগ ছিল নিজেদের এগিয়ে নেওবার। প্রাথমিক কাজটুকু সাড়ার পর এখন আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং এক প্রতিপক্ষ তাদের সামনে। বেলজিয়ামের স্বর্ণালী প্রজন্মের দলটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এখন অনেকটাই বাটশুয়াইয়ের উপর। ১০২ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬৮ গোল করে বেলজিয়ামের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা লুকাকুর স্থানে নিজেকে প্রমান করাই এখন বাটশুয়াইয়ের মূল দায়িত্ব।
চার বছর আগে টুর্নামেন্টে তৃতীয় হওয়া বেলজিয়াম এবার সেই সাফল্যকে ছাড়িয়ে যেতে মুখিয়ে আছে। এর আগে ’৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে একমাত্র দেখায় মরক্কোকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছিল বেলজিয়াম। এনিয়ে বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ আটটি ম্যাচের সবকটিতেই জয়ী হয়েছে বেলজিয়াম। বিপরীতে মরক্কো সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের প্রমানে ব্যস্ত ছিল। সে কারণেই ২০১৮ রানার্সআপদের প্রথম ম্যাচেই রুখে দিয়ে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজেই আজ মাঠে নামবে আফ্রিকান দেশটি। এ পর্যন্ত খেলা পাঁচটি বিশ্বকাপের কোনোটিতেই গ্রুপ পর্বের বাঁধা পেরুতে পারেনি মরক্কো। চার বছর আগে কঠিন গ্রুপ থেকে মাত্র এক পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল দলটি।
বর্তমান কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুই ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন তার দলের নক আউট পর্বে যাওয়াটা অনেকটা অবাস্তব, এক্ষেত্রে গ্রুপের ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষদের তিনি এগিয়ে রেখেছেন। যদিও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রতাশ্যার চেয়ে ভালো ফল করায় মরক্কোকে নিয়ে অনেকেই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে খেলা ১৭টি ম্যাচের নয়টিতেই তারা কোনো গোল করতে পারেনি।
গত বছর আফ্রিকান নেশন্স কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মিশরের কাছে পরাজিত হওয়ার পর সাবেক কোচ ভাহিদ হাভিহোডিচ হামিক জিয়েচ ও নুসাইর মাজারুইর মতো খেলোয়াড়কে বাদ দিয়েছিলেন; কিন্তু রেগ্রাগুই দলে আসার পর আবার তারকা এই দুই খেলোয়াড়কে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনেন। কাতারে ভালো একটি শুরুর পর আজকের ম্যাচেও অন্তত এক পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে মরক্কো। কানাডার বিপক্ষে চারদিন পর শেষ ম্যাচের আগে যাতে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা যায় সেটাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।