রাঙ্গাবালীর পাঁচ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
সড়কটি নতুন নাকি পুরনোÑ দেখে বোঝার উপায় নেই। চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়ক। তিন বছর ধরেই আছে খোয়া বিছানো। কিন্তু এর পর কাজ আর এগোচ্ছে না। এখন সড়ক হয়েছে উঁচুনিচু। একটু পর পরই খানাখন্দ। গাড়িতে পথযাত্রী গেলে ঝাঁকুনি, পথচারী হাঁটলে চোট। দুর্ভোগের এ সড়কে একবার গেলে, আরেকবার যেতে অনীহা। আর বিকল্প সড়কও দুর্ভোগের। তাই বাধ্য হয়ে ঝাঁকুনি খেয়েও এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে পথযাত্রী ও পথচারীদের।
এই চিত্র রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের খালগোড়া বাজার থেকে পশুরবুনিয়া হয়ে সেনের হাওলা পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কের। জানা গেছে, প্রায় তিন কিলোমিটার এ সড়কের নির্মাণকাজ ঝুলে আছে তিন বছর ধরে। অনেকটা মন্থরগতিতেই চলছে কাজ। ফলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষ।
এলজিইডির উপজেলা কার্যালয় জানায়, বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (পটুয়াখালী ও বরগুনা) প্রকল্পের আওতায় রাঙ্গাবালী উপজেলার খালগোড়া থেকে পশুরবুনিয়া আলী আশরাফ ফরেস্টারের বাড়ি পর্যন্ত তিন হাজার ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ও তিন মিটার প্রস্থের এই সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। এমডিএইচ ও এসএইচই এই দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কার্যাদেশ পায় ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর। সড়ক নির্মাণে চুক্তিমূল্য ধরা হয় ৩ কোটি ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৯ টাকা। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সড়কটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। কিন্তু তিন বছর অতিবাহিত হলেও এর কাজ শেষ হয়নি। অথচ ২০২১ সালের জুন মাসে কাজ শেষ করার কথা ছিল। সূত্রে জানা গেছে, ৫০-৫৫ শতাংশ কাজ করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৩ লাখ টাকার একটি বিল তুলে নিয়েছেন।
পথযাত্রীরা বলছেন, এ সড়কে মোটরসাইকেলে চলাচল করলে ঝাঁকুনিতে সুস্থ মানুষের মাজাও ব্যথা হয়ে যায়। এই সড়কের আটোচালক সদর ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের রনি খাঁ বলেন, ‘অনেক দিন ধরে রাস্তাটা (সড়ক) এভাবে পড়ে আছে। খোয়া বিছানো এই রাস্তার জায়গায় জায়গায় খানাখন্দ। গাড়ি চালাতে খুবই কষ্ট হয়। কেউ এসব চোখে দেখে না।’
এই সড়ক নির্মাণকাজের তদারকিতে থাকা এলজিইডির সার্ভেয়ার সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদার এত দিন করেনি, এখন মনে হয় শুরু করবে বোঝা যায়। ঠিকাদারের সঙ্গে আলাপ করছি, সে বলছে কাজ শুরু করবে। এখন বিটুমিন ও পাথরের দাম বাড়তি অনেক। ঠিকাদাররা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সময় বাড়ায়।’ সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আলী আশরাফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিজানুল কবির বলেন, ‘সড়ক নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডারের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি লিখেছিলাম। পরে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুনরায় কাজ করবে বলে আশ্বাস দেয়। আশা করছি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুবার সময় বাড়িয়েছে।’