ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেছেন, রুশ আগ্রাসনের মুখে দাঁড়ানোর মতো ইউরোপ যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। যুক্তরাষ্ট্র না থাকলে ইউরোপ সমস্যায় পড়বে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এমন মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছে ফিনল্যান্ড। যদিও এতে আপত্তি ছিল রাশিয়ার। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেছে ফিনল্যান্ড। এমন প্রেক্ষাপটে অস্ট্রেলিয়া সফরে সানা মারিন বলেন, ইউরোপের প্রতিরক্ষা অবশ্যই আরও জোরদার করতে হবে। তার কথায়, আমাকে অবশ্যই নির্মমভাবে সৎ হতে হবে, এই মুহূর্তে ইউরোপ যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আমরা সমস্যার সম্মুখীন হব।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত মার্কিন সহায়তার অংক দাঁড়িয়েছে ১৮.৬ বিলিয়ন ডলারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আর তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গত শুক্রবার লয়ি ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী। এমন মন্তব্য করেছেন ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী। সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপ্রার্থী দেশের এ নেত্রী বলেছেন, ইউরোপকে তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে।
ইউক্রেনকে সহায়তা করায় ইউরোপিয়ান দেশগুলোর অস্ত্রের মজুদ অনেকাংশে কমেছে। ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউরোপের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে আরও কাজ করতে হবে। ওই অনুষ্ঠানে আনা মারিন আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অনেক অস্ত্র দিয়েছে। অনেক আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, অনেক মানবিক সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু (এ রকম সহায়তা দিতে) ইউরোপ এখন পর্যন্ত যথেষ্ট শক্তিশালী হয়নি। তিনি আরও বলেছেন, এ রকম পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে ইউরোপকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং সেই সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্যই ন্যাটোর কড়া সমালোচনা করতেন। সেই সময় তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের তুলাধুনা করেছেন। ট্রাম্পের ভাষ্য ছিল, ইউরোপ সামরিক খাতে পর্যাপ্ত অর্থ ব্যয় করে না। ২০২০ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র তাদের মোট জিডিপির ৩.৭ ভাগ সামরিক খাতে ব্যয় করেছে। যেখানে ইউরোপের দেশগুলো ব্যয় করেছিল ১.৭৭ ভাগ। সেই সময় ন্যাটোকে সামরিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছিলেন ট্রাম্প।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের মূলে রয়েছে ন্যাটোর সূত্র। ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চাইলেও এর সরাসরি বিরোধিতা করে রাশিয়া। কিন্তু মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তা নিয়ে রুশ হুমকি উপেক্ষা করতে থাকে ইউক্রেন। এর সমুচিত জবাব দিতে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ করে রাশিয়া। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লিাদিমির পুতিনের ভাষায় এটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’।