advertisement
advertisement
advertisement

সংবাদ সম্মেলনে রামরু
জনশক্তি রপ্তানি বেশি হলেও কমেছে রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:০০ এএম | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৫৯ এএম
advertisement

 

গেল বছরের তুলনায় চলতি বছর বিদেশে কর্মী বেশি গেলেও রেমিট্যান্সের পরিমাণ কম এসেছে। ডলারের দাম বাড়তি থাকার কারণে রেমিট্যান্স বাড়ার কথা। কিন্তু চিত্র ভিন্ন। রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা দরকার বলে মনে করছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রামরু। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি-২০২২ অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রেমিট্যান্সের বিপরীতে অন্তত ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া উচিত। অন্যান্য খাতে প্রণোদনার হার বেশি হলেও যে খাতের পুরোটাই দেশে রিজার্ভে যুক্ত হচ্ছে, সে খাতে যে পরিমাণ প্রণোদনা দেওয়া হয় তা খুবই কম। এ কারণেই হুন্ডি আমদানি বাড়ছে। লিখিত বক্তব্যে রামরুর নির্বাহী পরিচালক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, গত ১১ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ১০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪ বাংলাদেশি কর্মী। এর মধ্যে নারীকর্মীর সংখ্যা ৯৯ হাজার ৬৮৪ জন। তবে এই সংখ্যা গত বছর ছিল ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন। তবে কর্মী পাঠানোর সংখ্যা বাড়লেও কমেছে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ। চলতি বছরের গত নভেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ১৯ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন, যা গত বছরের

advertisement

তুলনায় ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ কম।

তিনি আরও বলেন, গত ১১ মাসে যে সংখ্যক কর্মী বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছে, তা ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে অভিবাসন প্রবাহ ৮১ দশমিক ৮৮ শতাংশ বাড়বে। আর চলতি বছর যে সংখ্যক নারীকর্মী বিদেশ গেছেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকলে এর সংখ্যা ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।

advertisement

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এবারও সবচেয়ে বেশি কর্মী গেছেন সৌদি আরবে। সেখানে গত ১১ মাসে গেছেন ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫০৭ জন, যা মোট অভিবাসনের ৫৬ শতাংশ। এর পর গেছেন ওমানে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪৮ জন, যা মোট অভিবাসনের ১৫ শতাংশ। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন ৯৪ হাজার ৫৮৯, সিঙ্গাপুরে ৫৯ হাজার ১৩১, মালয়েশিয়া ২৭ হাজার ৮০০ এবং কাতারে গেছেন ২২ হাজার ১৮৬ জন।

তথ্যে আরও দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে দক্ষ কর্মী কম পাঠানো গেছে, ১৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গত বছর ছিল যা ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এবার ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, এখনো সিংহভাগ কর্মী যায় ব্যক্তিগত ভিসায়। ফলে সেখানে দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। রিক্রুটিং এজেন্সি বা সরকারের মাধ্যমে কর্মী পাঠানো গেলে দক্ষতা নিয়ে কর্মীরা বিদেশ যেতে পারতেন এবং রেমিট্যান্স আসার পরিমাণও বাড়ত। এ ছাড়া ১১ মাসে বিদেশে যাওয়ার সংখ্যার পাশাপাশি ফিরে আসার সংখ্যাও কম ছিল না। বিশেষ করে তিন হাজারের মতো কর্মীর লাশ এসেছে।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, এবার ৮১ শতাংশ অভিবাসন বেড়েছে, এটি অনেক বড় বিষয়। কিন্তু রেমিট্যান্স সে তুলনায় আসছে না। সেটি কেন- খুঁজে বের করা দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে অভিবাসীদের ব্যাংকের ওপর আস্থা ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া, নবনির্মিত কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোর (টিটিসি) পরিচালনায় সরকার এনজিওদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা, তরুণদের সহযোগিতায় অভিবাসন সম্পর্কিত মোবাইলঅ্যাপগুলোর প্রয়োগে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা, গন্তব্য দেশে অভিবাসীদের সন্দেহজনক অস্বাভাবিক মৃত্যুর কিছু কিছু কেস পুনরায় ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া, বায়রাতে গঠিত অভিযোগ সেল দ্রুত সক্রিয় করে অভিবাসীদের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা এবং মানবপাচারসংক্রান্ত মামলাগুলো প্রসিকিউশনের হার বাড়ানো।