বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার করুণ অবস্থা জানতে কোনো নিগূঢ় গবেষণার প্রয়োজন হয় না। প্রতিদিন সংবাদপত্র ও বেসরকারি টেলিভিশনের সচিত্র প্রতিবেদনেই বেরিয়ে আসছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার করুণ চিত্র।
গতকাল আমাদের সময়ের প্রতিবেদনে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কাঁচামাল সংকট দেখিয়ে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস সেবা প্রদানকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা।
গত শুক্রবার সকালে চমেক হাসপাতালের নিচতলায় থাকা ডায়ালাইসিস সেন্টারের স্যান্ডর কর্তৃপক্ষ সেবা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দেয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত নভেম্বর থেকে ডায়ালাইসিসের কাঁচামাল সরবরাহকারী অনেক প্রতিষ্ঠান আংশিক এবং কেউ পূর্ণাঙ্গ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এ কারণে কাঁচামালের সংকট তৈরি হয়েছে। এতদিন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করে নগদ টাকায় মালপত্র কিনে ডায়ালাইসিস সেবা চালু রাখা হয়েছিল। তবে বর্তমানে আমাদের হাতে যথেষ্ট টাকা না থাকায় প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল স্বল্পতায় সেবা সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ঘটনা দেশে স্বাস্থ্যসেবার রুগ্ন ও করুণ চিত্রই তুলে ধরে। চমেক হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান কেন নিজস্ব সক্ষমতা তৈরি না করে ভাড়া করা প্রতিষ্ঠান দিয়ে ডায়ালাইসিস করাবে?
গত বছরের ৪ জানুয়ারি এভাবে নোটিশ টাঙিয়ে সেবা বন্ধ করে দেয় স্যান্ডর। এক বছর পর আবারও একই পদ্ধতিতে নোটিশ ঝুলছে সেখানে। যেসব মানুষের আর্থিক সামর্থ্য আছে- তারা বেশি অর্থ ব্যয় করে বেসরকারি হাসপাতাল, এমনকি বিদেশে গিয়েও চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু জনগণের বৃহত্তর অংশ গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর সরকারি হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। উল্লেখ্য, কিডনি রোগ চিকিৎসার দুটি পদ্ধতি আছে। প্রথমটি হলো কিডনি প্রতিস্থাপন- যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। দ্বিতীয়টি হলো নিয়মিত ডায়ালাইসিস। আমরা চাই- এ সংকট সমাধানে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা দ্রুত নেওয়া হবে।