ব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হচ্ছে কাঁচা চামড়া
আমাদের রপ্তানি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্ভাবনাময় চামড়া খাত। তৈরি পোশাকশিল্পের পরই এ শিল্পের অবস্থান। রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯ শতাংশ আসে চামড়াশিল্প থেকে। এ দেশে চামড়াশিল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫১ সালের ৩ অক্টোবর। এর পর নারায়ণগঞ্জ থেকে সরকার চামড়াশিল্পকে ঢাকার হাজারীবাগে নিয়ে আসে; কিন্তু এখানে বর্জ্য শোধনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ট্যানারিগুলো প্রতিদিন প্রায় ২৪ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিত।
ফলে বছরের পর বছর ধরে বুড়িগঙ্গার পানি দূষিত হয়েছে। পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে সরকার ২০০৩ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে বিসিকের তত্ত্বাবধানে সাভারে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপন করে। এতে করে এ শিল্পের একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোর অভাবে কিছু সংকট রয়েই গেছে।
গত রবিবার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, রপ্তানি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) আন্তর্জাতিক মান বাড়িয়ে দ্রুত এর শতভাগ বাস্তবায়ন জরুরি। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিকাশ ঘটাতে কমপ্ল্যায়ান্স ও সার্টিফিকেশনও প্রয়োজন। মূলত চামড়াজাত পণ্য তৈরির জন্য কাঁচা চামড়া আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। অথচ উন্নত ব্যবস্থাপনার অভাবে পচে নষ্ট হচ্ছে দেশি কাঁচা চামড়া।
সুপরিকল্পনা করা এবং তা বাস্তবায়নে দক্ষতা ও নিষ্ঠার অভাব যেন সরকারি কাজের বৈশিষ্ট্য হয়ে গেছে। সাভারের চামড়া শিল্পনগরের অবকাঠামো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনের মান প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করায় আর গাফিলতি নয়।
সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা বাড়লেও নানা সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা সাভারের চামড়া শিল্পপল্লীতে পুরোপুরি কাজ করতে পারছে না। সম্ভাবনাময় চামড়াশিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী চামড়াশিল্পকে বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।