advertisement
advertisement
advertisement

পরিবহন চাঁদাবাজির দ্বন্দ্বে খুন হয় লাইনম্যান ইমরান

কাউন্সিলরসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা ৮ আসামি কারাগারে

ইউসুফ সোহেল
২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৩:১১ এএম
advertisement

টোলের নামে পরিবহন চাঁদাবাজির আধিপত্য ধরে রাখতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকায় ‘লাইনম্যান’ ইমরান হোসেনকে কুপিয়ে খুন করা হয়। তিনি ঢাকা জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরি-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের হয়ে কাজ করতেন। গত সোমবার মধ্যরাতে যাত্রাবাড়ী আড়তে তাকে খুন করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর চাঁদাবাজির বিরোধের তথ্য জানতে পারার দাবি করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী পপি আক্তার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুম মোল্লাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেছেন। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেনÑ আকরাম উজ্জামান ওরফে উজ্জ্বল মোল্লা, মুস্তাকিম, শুভ, মোহাম্মদ আলী, আরিফ, তানজিল মিয়া, বুলু বাবু, পলাশ, জামাল, রাজিব, রমজান মোল্লা, জাহিন, দেলা, হাসান, সাগর, রাজু, সুমন, ফয়সাল, পারভেজ, সোহেল ও মো. রাজন। এ ছাড়া আরও ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

advertisement

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা জেলার ট্রাক-ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান ইউনিয়ন। নিহত লাইনম্যানের মরদেহ নিয়ে করা

এই বিক্ষোভে শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেনÑ চাঁদাবাজ উজ্জ্বল, আরিফ, আওলাদ ও তাদের পালিত সন্ত্রাসীরা নিরীহ শ্রমিক ইমরানকে হত্যা করেছে। অবিলম্বে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

advertisement

এদিকে ইমরান খুনের মামলার ৮ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৬ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী পপি আক্তার এজাহারে জানিয়েছেন, ইমরান পেশায় পিকআপচালক। যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ কাজলা নয়ানগরে সপরিবারে থাকতেন তিনি। গাড়ি চালানোর পাশাপাশি কাঁচাবাজারে পিকআপ, ট্রাকের কুলি মজুরির টোল আদায় করতেন ইমরান। গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাঁচাবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ইমরান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে হত্যাকাণ্ডের খবর পান।

জানা গেছে, ঘটনাস্থল যাত্রাবাড়ী আড়ত নামে পরিচিত হলেও এ পাইকার বাজারের ভেতরে বিভিন্ন নামে বাজার রয়েছে। আড়তে প্রতিদিন রাতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েকশ পণ্যবাহী গাড়ি আসে। এসব গাড়ি থেকে নিয়মিত ৭ থেকে ৮টি খাতের নামে অবৈধভাবে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায়ই সশস্ত্র হামলায় জড়িয়ে পড়ে একাধিক গ্রুপ। সর্বশেষ গত সোমবার মধ্যরাতে আল আমিন ও উজ্জ্বল মোল্লা গ্রুপের মধ্যে হামলা পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটে। এতে টোল আদায়কারী লাইনম্যান ইমরান নিহত এবং শাহাদত হোসেন ও সিদ্দিক নামে দুই যুবক আহত হন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ইমরান ছিলেন ঢাকা জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরি-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের অনুসারী।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মো. মফিজুল আলম জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। পরিবহন চাঁদাবাজির দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।