গাজীপুরে স্কাউট জাম্বুরি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
আজকের শিশুরাই আগামী দিনে নেতা, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কবি, সাহিত্যিক, প্রশাসক, শিক্ষক ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে দেশের সেবা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি চাই আমাদের দেশের আজকের শিশুদের জীবন সুন্দর ও নিরাপদ হোক। কারণ আজকের শিশু-কিশোররাই আগামী দিনের জাগরণ, তারা বাংলাদেশের কর্ণধার হবে।’
গতকাল বুধবার সকালে গাজীপুরের মৌচাকে ৩২তম এশিয়া প্যাসিফিক একাদশ জাতীয় স্কাউট জাম্বুরি সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ তথ্য জ্ঞানসম্পন্ন একটি জাতি। যে জাতি হবে স্মার্ট জাতি।’ ২০২২ সালে যে বাংলাদেশ দেখা যাচ্ছে, তা আগে এ রকম ছিল না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিনিয়ত সংঘাত, খুনাখুনি, অগ্নিসন্ত্রাস, দুর্নীতি, অবৈধভাবে ক্ষমতাদখলের পালা, নির্বাচন নিয়ে খেলা, নানা ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের অতিক্রম করতে হয়েছে।’ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়া শুরু হয় বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি চাই আমাদের দেশের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক। যেখানে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এদের কোনো স্থান থাকবে না। সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত থাকবে।’
শিশুদের উদার মন নিয়ে বেড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কাউটিং নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও জীবন ধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, আর তরুণদের মধ্যে আধুনিক, প্রগতিশীল, সৃজনশীল গুণাবলি বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে এবং সচেতন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলছে।’ স্কাউট আন্দোলন আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের স্কাউটকে শক্তিশালী করতে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমাদের ২২ লাখ স্কাউট সদস্য আছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ লাখ স্কাউট করা হবে। লক্ষ্যটা থাকবে, প্রতিটি শিক্ষার্থীই স্কাউট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ আমি বিশ^াস করি, আমার দেশ সোনার বাংলা গড়ার ও স্মার্টবাংলা গড়ার সুনাগরিক তৈরি হবে।’
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ স্কাউট সুনাম বৃদ্ধি করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের স্কাউট সদস্যরা ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বিশ^ স্কাউট জাম্বুরি আয়োজন করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে বিভিন্ন প্রযুক্তির শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্টস রোবোটিক, নেনোটেকনোলজি এসব বিষয়ে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছি, তা ছাড়া ইকোপার্ক, হাইটেকপার্ক ইনকিউবেশন সেন্টার বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় করে দেওয়া হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে আমরা আলোকিত করে দিয়েছি। দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছেÑ এগিয়ে যাবে।’