মামলার আসামি অজ্ঞাত
রাজধানীর মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় সেন্ট মেরিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বিস্ফোরণের কারণও সুনিশ্চিত হতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার পর থেকে স্থগিত রয়েছে স্কুলটির কার্যক্রম। ভবনের নিচতলায় যে ফার্মেসির সামনে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেটিও বন্ধ রয়েছে। মূল ফটক আটকিয়ে রাখা হলেও স্বাভাবিক রয়েছে ভবনটির গার্লস হোস্টেলের কার্যক্রম। তবে ক্রাইমসিন টেপ দিয়ে গতকাল বুধবার বিকাল পর্যন্ত ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা ছিল।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ধারণা, শক্তিশালী ককটেল রাখা ছিল ড্রামটিতে।
এদিকে, এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে রমনা মডেল থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করে। এতে কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কারণ, কারা কি কারণে ওই প্লাস্টিকের ড্রামে বিস্ফোরক রেখে গেল সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে ঘটনাস্থল থেকে
জব্দকৃত সিসি ক্যামেরা ফুটেজের সূত্র ধরে এগিয়ে চলছে তদন্ত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিস্ফোরক রেখে যাওয়া ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে রহস্যের উদ্ঘাটন হবে এ ঘটনার। এ জন্য ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। আমরা কাজ করছি। আশা করি দ্রুতই এর সঠিক রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারব। ভবনের নিচতলায় থাকা মেট্রো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ম্যানেজার মো. আবদুস সালাম বলেন, ঘটনার পর স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। আর স্কুল খোলেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যও গতকাল ঘটনাস্থলে যায়নি। এদিকে, আগামী রবিবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে ভবনটির পাশের রমনা কিড্স কিন্ডারগার্ডেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফলে এই স্কুলটিও গতকাল বন্ধ ছিল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে মগবাজারের সেন্ট মেরিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভবনের ভেতর থেকে একটি প্লাস্টিকের ড্রাম বের করে নিয়ে আসা হয়। ড্রামটি অনেক দিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। একই ভবনের নিচতলায় থাকা ফাস্ট ফার্মা লিমিটেড নামক দোকানের সামনে প্লাস্টিকের ড্রামটি রাখা হয়। পরে পাশে থাকা বিসমিল্লাহ ভাঙাড়ির কর্মচারী আতিকুল ইসলাম (১৫) ড্রামটি দোকানের সামনে থেকে সরাতে গেলে এতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে পথচারী অগ্রণী অ্যাপার্টমেন্টের প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম (৩৫), ডিপিডিসির কর্মচারী আবুল কালাম (২৫), মো. তারেক (২৫), মো. শাহিন (২৭) ও ভাঙাড়ি দোকানের কর্মচারী আতিকুল ইসলাম আহত হন। আতিকুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন, কাউন্টার টেররিজমের (সিটিটিসি) বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও গোয়েন্দা বিভাগসহ বিভিন্ন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে টিনের টুকরো, ককটেলের স্ক্রু, পলি ও স্কচটেপসহ সিসিটিভির ডিভিআর, হাই পাওয়ার এলইডি মনিটর জব্দ করা হয়েছে।