advertisement
advertisement
advertisement.

সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:১৩ পিএম
advertisement..

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘রাজনৈতিক বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেছেন, শুরু থেকেই বিষয়টি সমাধানের জন্য জোরালো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

advertisement

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

মন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যেন না আসে, সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। র‌্যাব, আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা, আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে নিয়মিতভাবে সমন্বয়সাধন করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরপরই আমি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলি। সে সময় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, সে ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা হয়। পরবর্তী সময়ে তারই আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফর করে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। বৈঠকে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা

এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরি। ওই সফরে সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক হয়। এতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তাদের সমর্থন চাই।’

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসা সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কথা হয়েছে। ওই সময় ডোনাল্ড লু বর্তমান র‌্যাবের কার্যক্রমের বিশেষ প্রশংসা করেন। মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সংরক্ষিত আসনের মমতা হেনা লাভলী বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা নামসর্বস্ব বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন। এটা বন্ধে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা-

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সবসময় আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কূটনীতিকদের স্বাচ্ছন্দ্য চলাচলসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। কূটনীতিকরা দুদেশের জনগণের স্বার্থে এবং কল্যাণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তবে আশা করি, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বা বিতর্ক সৃষ্টি করে- এমন বিষয় বা অনুষ্ঠান থেকে কূটনীতিকরা বিরত থাকবেন। তবে আমাদের কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বিরোধী দল ও কিছু গণমাধ্যম তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বক্তব্য দিতে উৎসাহিত করে, যা অন্যান্য দেশে প্রচলিত নয়।

কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের বিধান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকার বিদেশি কোনো কূটনীতিককে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে বাধা দেবে না। আশা করি, এসব অনুষ্ঠানে কূটনীতিকরা শিষ্টাচার বজায় রাখবেন।

সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদের প্রায় একই ধরনের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু বিদেশি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য রাখেন। তাদের এ ধরনের শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কূটনীতিকদের কাছে তাদের বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার পালন করে দায়িত্ব পালন করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কূটনীতিকরা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দপ্তর অথবা ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন এবং তাদের কোনো বক্তব্য থাকে তা আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু সেটা না করে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বা গণমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য করলে তা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’