গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে রাজধানীতে চার দিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে রাজধানীর পৃথক চারটি এলাকায় এ কর্মসূচি হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আগামী ২৮, ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচিটি পালন করা হবে। প্রতিদিন কর্মসূচি দুপুর ২টায় শুরু হবে।
কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে ২৮ জানুয়ারি বাড্ডায় সুবাস্তু ভ্যালি থেকে মালিবাগে আবুল হোটেল পর্যন্ত সামনে এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী টার্মিনাল থেকে শুরু হয়ে
মিরপুর ১নং হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি বাড্ডা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদযাত্রা হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ ১০ দফা দাবিতে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে এ কর্মসূচি। আমরা আশা করব, সবাই এতে সহযোগিতা করবেন এবং জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে।’ তিনি জানান, এ কর্মসূচি মহানগর বিএনপির। এটি অন্যান্য (সমমনা) দলকেও বলব যে তারা অংশগ্রহণ করতে চাইলে যুগপৎভাবে করবেন।
সময় টিভির ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সময় টিভির একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করছি- একটি পার্টিকুলার চ্যানেল, আমি নাম বলতে বাধ্য হচ্ছি ‘সময়’ চ্যানেল একটা ফিচার প্রচার করেছে, যেটি কোনোমতেই সুস্থ সাংবাদিকতার সঙ্গে যায় না, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সঙ্গে যায় না, কোনোমতেই বর্তমানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনের পেছনে একটা ছুরিকাঘাত করার মতো। এবং পুরোপুরিভাবে একটা পক্ষ অবলম্বন করা। যখন দেশের টিভি চ্যানেল বা জাতীয় পত্রপত্রিকাগুলো চলমান আন্দোলনকে নিঃসন্দেহে তারা জনগণের কথা তুলে ধরছেন, জনগণের পক্ষে কথা বলছেন; সেই সময়ে হঠাৎ ‘সময়’ চ্যানেলের এই ধরনের ডকুমেন্টারি প্রচার করা নিঃসন্দেহে আমি মনে করি অনভিপ্রেত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আশা করব সময় চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এ প্রতিবেদন বা ডকুমেন্টারির প্রচার সম্পূর্ণ বন্ধ করবেন এবং এ ধরনের বিদ্বেষমূলক প্রচার যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’ তিনি সময় টিভিকে মূলধারার একটি চ্যানেল উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি- তাকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে নেওয়া, তাকে সাজা দেওয়া- এর সবটাই হচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাজানো ঘটনার মধ্য দিয়ে। একইভাবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা হয়েছে, সেই মামলা সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি- এসব মামলা সাজানো। তাকে শুধু রাজনৈতিকভাবে হেয় করা এবং তিনি যেন রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে জন্য করা হয়েছে। এসব বলার পরও ‘সময়’-এর এই বিদ্বেষমূলক প্রচার ফ্যাসিবাদকেই শক্তিশালী করবে। আশা করি তারা এটি থেকে বিরত থাকবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মো. মোহন, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের লিয়াকত আলী, জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।