ক্যাম্পাসে বেপরোয়া অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করাসহ ৪ দফা দাবিতে মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় তারা বাঁচার মত বাঁচতে চাই; নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই, আমার ভাই আহত কেন? প্রশাসন জবাব চাই; ঘাতক চালকের বিচার চাই- করতে হবে প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় তারা চার দফা দাবি জানায়- আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করা, দোষী মোটরসাইকেল চালকের শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ করা ও প্রতিটি হলের সামনে গতিনিরোধক স্থাপন করা।
পরে রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালাতে থাকলে দুইটায় উপাচার্য এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্যের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যায়।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে ভাসানী হলের দিকের রাস্তায় বেপরোয়া মোটরসাইকেলের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
৫১ ব্যাচের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘তিনদিন হলো মাত্র ক্লাস শুরু হয়েছে। এই ৩ দিনেই একজন আহত হল। আপনারা বলছেন নিরাপদ ক্যাম্পাস চান। কিন্তু তারপরও কেন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। অনেক হল থেকে বের হতে দেয় নাই। গণতান্ত্রিক দাবিতে কেন বাধা দেওয়া হলো? আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা চাই। আগামীকালের মধ্যে দোষী ব্যক্তির শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমি আহত ছাত্রটাকে দেখে এসেছি। আমি আবার সকালে তাকে দেখতে যাব। আমি চাই দোষীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত হোক।’
এসময় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমি এনাম মেডিকেলে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীকে দেখে এসেছি। এখন আমাদের মূল কনসার্ন হল আহত ছেলেটাকে সুস্থ করা। তার চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। ডিসিপ্লিনারি বোর্ডে দোষী ব্যক্তির শাস্তির নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা আহত শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করবো। সাত কর্মদিবসের মধ্যে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসের রাস্তায় প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলোতে গতিরোধকের ব্যবস্থা করা হবে।’