দেখতে ঠিক অস্ট্রেলিয়ান আপেলের মতো। গায়ে হালকা সিঁদুর রঙ। নাম তার বনসুন্দরী বরই। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে এই বনসুন্দরী বরই।
চাষ করছেন জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আতাউর রহমান খান। বরই ছাড়াও তিনি ৫০ শতক জমিতে ভিন্ন ভিন্ন বিদেশি কমলা, আমসহ বেশ কয়েক প্রজাতির চারা রোপণ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। মহামারী করোনাকালেও প্লাস্টিক বোতলে পেঁয়াজ-রসুন চাষ করেও অবাক করেছিলেন তিনি।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে থোকা থোকা বরই ঝুলছে। প্রতিটি বরইয়ের গায়ে হালকা সিঁদুর রঙ। ফলটি রসালো ও মিষ্টি। সুস্বাদু বাহারি রঙের বরই আর কয়েক দিন পর বাজারে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষক আতাউর রহমান। এইচএসসি পড়ার পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি। ঝুঁকে পড়েন কৃষিকাজে। কীভাবে নিজস্ব চিন্তায় বিদেশি ফলের চাষ করা যায় সে চিন্তায় ডুবে থাকেন সর্বক্ষণ।
নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘অজি সাইট্রাস বিডি’ নামের নার্সারি। ৫০ শতক জায়গা জুড়ে এ নার্সারিতে লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি চারা। ইম্পেরিয়াল ম্যান্ডারিন জাতের অস্ট্রিলিয়ান, পাকিস্তানি ও দার্জিলিং কমলা, ড্রাগন ফল, সাইট্রার্স রুট, বনসুন্দরীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে তার নার্সারিতে। ৪০ প্রজাতির আমের গাছ লাগিয়েছেন। এগ অব সান (সূর্য ডিম) আলফ্রানসেস, চিয়াংমাই, ব্রুনাই কিং, কিং অব চাকাপাত, থ্রিটেস্ট, আমেরিকান কেন্ট, ন্যাম ডকমাই গ্রিন, ন্যাম ডকমাই ইয়েলো অন্যতম। বাড়িতেও লাগিয়েছেন বিদেশি বিভিন্ন মসলা জাতীয় গাছ।
কৃষক আতাউর রহমান জানান, কয়েক বছর ধরে বিদেশি গাছ সংগ্রহ করে কলম তৈরি করছেন। রোপণ করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি চারা। অস্ট্রেলিয়ান, পাকিস্তানি ও দার্জিলিং কমলা, বনসুন্দরী বরই, ৪০ প্রজাতির আমের গাছ রোপণ করেছেন। বিশেষ করে জেলায় প্রথম চাষ করছেন বনসুন্দরী বরই।
কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-সহকারী মোতালেব হোসেন বলেন, কৃষক আতাউর রহমান এ এলাকার আদর্শ কৃষক। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উনার চাষবাদ তা ভাবার মতো।
তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, কৃষক আতাউর রহমান তার নার্সারিতে বেশ কিছু বিদেশি ফলের চারা উৎপাদন করেছেন এবং নিজস্ব জমিতে চাষও করছেন। কৃষি বিভাগ যে কোনো প্রয়োজনে তার পাশে আছে এবং থাকবে।