চিলাই নদীতে তিন বছরেও সেতু হয়নি
গাজীপুরের শ্রীপুর ও কাপাসিয়াসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে উন্নয়ন করা হয়েছিল ৬.১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সদর-রাজাবাড়ী জিসি সড়ক। ৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট প্রস্থের এই সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৮ মাস আগে। তবে এই সড়কের চিলাই নদীর ওপর ব্রিজ না থাকায় উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে না স্থানীয়রা। ৩ বছরেও ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় জনদুর্ভোগের আশঙ্কা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিসের তথ্য মতে, এ সড়কের সারালিয়া এলাকায় চিলাই নদীর দুপাশের সড়ক সংযোগের জন্য নদীর ওপর ৬০ মিটার ব্রিজ নির্মাণের জন্য মেসার্স ডিএই-ইউডিসি নামে একটি প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। এতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। দুই দফা সময় বাড়িয়ে তাদের সময়সীমা শেষ হয় গত বছরের মার্চে। এই সময়ের মধ্যে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়। এদিকে ৩ বছরে নির্মাণকাজ শেষ করতে না পারায়
কার্যাদেশ বাতিল করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিএই-ইউডিসি জয়েন্ট ভেঞ্চারের। এ ব্রিজ নির্মাণের জটিলতার বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্যের জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। গাজীপুর জেলা শহরে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম এ ব্রিজটি। ব্রিজটি না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষদের। এ ব্রিজটি নির্মাণ হলে শ্রীপুর ও কাপাসিয়া উপজেলা থেকে গাজীপুর সদরে যেতে দূরত্ব কমবে অন্তত ১০ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থাও সহজতর হবে।
বর্তমানে সেতু সংলগ্ন স্থানে চিলাই নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে সীমিত পরিসরে মোটরসাইকেল ও মানুষ চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে বাঁধটি তলিয়ে যায়, ফলে চলাচল তখন অসম্ভব হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের ঠিকাদার কাজটি শেষ না করায় নতুন করে দরপত্র আহ্বান করায় ব্যয় বাড়বে অন্তত ৫০ লাখ টাকা।
প্রহলাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হক আকন্দ বলেন, এ ব্রিজটি তৈরির জটিলতায় বর্তমানে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয়দের যাতায়াত করতে হয়। দুপাশের সড়কের উন্নয়ন হলেও স্থানীয়রা উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারছে না। আমাদের দাবি খুব দ্রুত যাতে এ ব্রিজের নির্মাণকাজ করা হয়। এতে পুরো উন্নয়ন স্থানীয়রা ভোগ করতে পারবে।
গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, এ একটি সড়ক জেলা শহরের সঙ্গে অতি দ্রুত যোগাযোগের পথ তৈরি করেছে। একটি সড়ককে কেন্দ্র করে কয়েকটি গ্রামেও ব্যাপক পরিবর্তন
এসেছে। যথাসময়ে সড়কের উন্নয়ন শেষ হলেও জটিলতায় ব্রিজের নির্মাণ এখনো শেষ হয়নি, তবে আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল বারেক বলেন, ব্রিজের কাজ ৩৫-৩৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। সময় মতো কাজ শেষ করতে না পারায় তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ শতাংশ জরিমানা আরোপ করা
হয়েছে। এখন নতুন করে কার্যাদেশের জন্য আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আশা করছি শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে কার্যাদেশ দিতে পারব।