প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘর, টিউবওয়েলসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১১ গ্রামের কয়েক হাজার নারী-পুরুষের কাছ থেকে ১২ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে গেছেন জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালককে আসামি করে স্থানীয় ইসমাইল হোসেন ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, জসিম উদ্দিন প্রথমে মানুষের মনে বিশ^াস স্থাপনের লক্ষ্যে গ্রামের নিম্ন আয়ের সহজ-সরল বেকার নারীদের নিয়ে দল গঠন করে। তাদের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শীতবস্ত্র, থ্রিপিস, শাড়ি, উপবৃত্তি, চাল, আটা, নগদ টাকা ও নেতাকর্মীদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয় মুজিবকোট। এসব বিতরণ অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয় এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগনেতা ও জনপ্রতিনিধিদের। এসবের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে অন্য স্থানে প্রচার করা হয়।
কুশমাইল ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জসিমের ফাঁদে আটকে আছেন ১১ গ্রামের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর, টিউবওয়েল, চাল, আটা, ময়দা নগদ টাকা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। এসব টাকা সংগ্রহে নিয়োগ দেওয়া হয় নারী সাব-ডিলার। মাসিক মোটা অঙ্কের বেতনের আশায় এসব সাব ডিলার গ্রামে গ্রামে ঘুরে তালিকা করে টাকা সংগ্রহ করে জমা দেন জসিমের কাছে। পরে জসিম পালিয়ে যান।
মামলার বাদী মো. ইসমাইল হোসেন মৃধা জানান, জসিম উদ্দিনের বাড়ি জেলা সদরের শম্ভুগঞ্জ হলেও কুশমাইল দেওনাইপাড় এলাকায় বিয়ে করেন। সেখানেই থাকতেন সপরিবারে। স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালককে নিয়ে তিনি এই ফাঁদ তৈরি করেন।
জসিম উদ্দিনের নিয়োগকৃত ডিলার ইয়াসমিন বলেন, আমাকে মাসে সাড়ে ১২ হাজার করে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে জনগণের কাছ থেকে জনপ্রতি ২২শ করে টাকা তুলে দিছি আমি। পরে হেই ট্যাহা (টাকা) লইয়া ভাগছে। একই কথা বলেন অন্য ডিলার লাভলী আক্তার।
অভিযোগে আরও জানা যায়, জসিম বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে, যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে লুটে নিয়েছে টাকা। নিঃস্ব করে দিয়েছে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারকে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম বলেন, যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা উধাও। এজাহারে উল্লেখিত প্রধান আসামির ঠিকানা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে লোকেশন বন্ধ দেখাচ্ছে। সে অন্য কোনো মোবাইল সিম ব্যবহার করছে কি না সে বিষয়েও আমরা খোঁজখবর রাখছি। তবে পুলিশের জালে ধরা তাকে পড়তেই হবে।