advertisement
advertisement
advertisement

লোহা কাটার ‘অক্সিজেন’ তৈরি হতো কারখানাটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
৪ মার্চ ২০২৩ ১১:২২ পিএম | আপডেট: ৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৪৮ এএম
advertisement

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুলপুর এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ কারখানাটিতে শিল্পে ব্যবহৃত (লোহা কাটার কাজ) অক্সিজেন উৎপাদিত হতো। যে সরঞ্জাম দিয়ে লোহা কাটা হয়, তা ‘গ্যাস কাটার’ নামে পরিচিত। কারখানাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।

নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- শামসুল ইসলাম, ফরিদুল আলম, রতন, আবদুল কাদের, সালাউদ্দিন।

advertisement

আরও পড়ুন: অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, দেখুন ছবিতে

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে ভরা হচ্ছিল অক্সিজেন। এসময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে বেশ কয়েকটি সিলিন্ডারে। মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় আগ্রাবাদ, কুমিরা ও সীতাকুণ্ড স্টেশনের তিনটি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও ছয়টি ইউনিট। প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব।

অক্সিজেন প্ল্যান্টের আশপাশের বাসিন্দারা জানায়, বিকট শব্দে আশপাশের দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। এতে প্ল্যান্টের আশপাশের অনেক ঘরবাড়ির দরজা-জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে ছোটাছুটি শুরু করে।

advertisement

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, বড় সিলিন্ডার থেকে যখন ছোট সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরা হচ্ছিল, তখন অতিরিক্ত প্রেসারের কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে। অথবা সিলিন্ডারের মেয়াদও শেষ হয়ে যেতে পারে। তদন্ত ছাড়া এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কারখানার এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘অক্সিজেন কারখানায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সিলিন্ডারের মেয়াদ আছে কি না বা কার্যকরী ক্ষমতা আছে কি না, তা যাচাই করা। আমাদের কারখানায় সিলিন্ডার পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি রয়েছে। নিয়মিত সিলিন্ডার পরীক্ষাও করা হয়। কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। বুঝতেও পারছি না।’

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, বিস্ফোরণে নিহতদের পাঁচজনের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা আছে। আরেকজনের লাশ ভাটিয়ারির বিএসবিএ হাসপাতালে রয়েছে।

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কর্মকর্তাও থাকবেন। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

চট্টগ্রামের মাঝারি আকারের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’। এই প্রতিষ্ঠানের ইস্পাত কারখানা, জাহাজভাঙা কারখানা ও অক্সিজেন কারখানা রয়েছে।

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডের আগুন নিয়ন্ত্রণে, তদন্ত কমিটি গঠন

এর আগে গত বছরের ৫ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এতে ঘটনাস্থলের আশপাশের অন্তত চার বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় বহু হতাহত হয়।