চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ‘সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয় জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। মর্মান্তিক এমন দুর্ঘটনার খবরেও কারখানার মালিকপক্ষের কেউ ঘটনাস্থলে আসেননি।
গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার ওই কারখানাটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের এক ঘণ্টার চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, দেখুন ছবিতে
ওইদিন রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমরা এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছি। উদ্ধার অভিযান চলমান আছে। রাতে যেহেতু অন্ধকার, সেহেতু উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হবে না। এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কারখানার মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযানে সহায়তা তো দূরে থাক, তথ্য দেওয়ার জন্যও ঘটনাস্থলে মালিকপক্ষের কেউ আসেননি।’
বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে মো. আব্দুল হালিম বলেন, ‘কারখানাটিতে অক্সিজেন উৎপাদন করা হয় এবং সিলিন্ডার রিফিল করা হয়। দুটি কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যান্ত্রিক ত্রুটি। ব্যবস্থাপনার কারণেও দুর্ঘটনা হতে পারে। তদন্ত শেষে স্পষ্ট করে বলা যাবে।’
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডের আগুন নিয়ন্ত্রণে, তদন্ত কমিটি গঠন
অক্সিজেন প্ল্যান্টের আশপাশের বাসিন্দারা জানায়, অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিকট শব্দে কয়েক দফা বিস্ফোরণ হয়। এ সময় আশপাশের দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। এতে প্ল্যান্টের আশপাশের অনেক ঘরবাড়ির দরজা-জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে ছোটাছুটি শুরু করে। বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়ে আঘাত করে প্ল্যান্টের লোহার টুকরা। কদমরসুল বাজারে গিয়ে পড়া ওই ধাতব বস্তুর আঘাতে এক ব্যক্তি নিহত হন।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে, ৩০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ (চমেক) বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হতাহতদের অনেকের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।’
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৬
জানা যায়, বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে ভরা হচ্ছিল অক্সিজেন। তখন বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে বেশ কয়েকটি সিলিন্ডারে। মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় আগ্রাবাদ, কুমিরা ও সীতাকুণ্ড স্টেশনের তিনটি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও ছয়টি ইউনিট। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি; পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব।
এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনার আশরাফুল আলম বলেন, ‘উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা অফিসিয়ালি কিছু বলতে পারছি না।’
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের আধা কিলোমিটার দূরে লোহার টুকরার আঘাতে নিহত ১