advertisement
advertisement
advertisement

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে: চুয়েট ভিসি

প্রেস রিলিজ
১৪ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৪ পিএম | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৪ পিএম
চুয়েটে নারী দিবস উদযাপন। ছবি: সংগৃহীত
advertisement

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘সভ্যতার শুরু থেকেই আমাদের নারীদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। দেশের বর্তমান উন্নয়নও অগ্রগতির পেছনেও রয়েছে নারীদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা। আমাদের দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেকই নারী। তাদের পিছিয়ে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই নারী শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও নারীদের এগিয়ে যেতে হবে। চুয়েটে বর্তমানে ১২ শতাধিক নারী শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। এছাড়া গত এক দশকে নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাও আশাব্যাঞ্জক হারে বেড়েছে। যেটা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহণের দিকটাতে আমাদের আরও আশাবাদী করে তোলে।’

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নমূলক কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে গঠিত অভিযোগ কমিটির আয়োজনে ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ স্লোগানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

advertisement

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েট অ্যালামনাই ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নীরা মজুমদার, চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়েটের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নমূলক কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে গঠিত অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসা. রোকসানা খাতুন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার, সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছা. ফারজানা রহমান জুথী, গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছাম্মৎ তাহমিনা আক্তার, ইইই বিভাগের সেকশন অফিসার আফরোজা সুলতানা রিমা, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুলসুমা বেগম, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ছাত্রী ইশরাত জাহান বুশরা।

advertisement

মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা সুলতানা ও উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরহাদ জামিলা।

প্রধান বক্তা বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘সংবিধানের একাধিক অনুচ্ছেদে নারীর অধিকার স্বীকৃত, বঙ্গবন্ধুও স্বাধীন বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। একজন জেলা প্রশাসকের একইসঙ্গে জেলা কালেক্টর, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক হিসেবে নির্বাহী দায়িত্ব পালন করতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক আমি। নারী হয়েও সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেকে কখনও নারী ভাবিনি। একজন মানুষ হিসেবেই আমি দায়িত্ব পালন করে চলেছি। নারী বা পুরুষ আলাদা কোনো সত্ত্বা নয়। নারী-পুরুষ মিলেই আমাদের দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা মেয়েরাও পারি এবং পারব এই বিশ্বাসটা সকল পুরুষের মাঝে জাগ্রত হতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নীরা মজুমদার বলেন, ‘চুয়েটের প্রথম নারী গ্র্যাজুয়েট হিসেবে পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করি। তখন চুয়েটে ৭৫০ জন শিক্ষার্থী ছিল। আর আমি একা একজন মেয়ে ছিলাম। সেই সময়ে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। শিক্ষক, সহপাঠী ও কর্মচারী সবার কাছ থেকেই অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। তবে কর্মজীবনের পথচলা এতোটা সহজ ছিল না। কিছুসংখ্যক নারী ক্ষমতায় আসা মানেই কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন না। এটাতে দেশের সামগ্রিক নারীর অগ্রগতির চিত্রও প্রতিফলন হয় না। তবে আমাদের সহকর্মী ও পার্টনার যদি সহযোগী মানসিকতার হয়, তাহলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা অনেকখানি সহজ হয়ে যায়।’

এর আগে নারী দিবস উপলক্ষে আজ দুপুর ১১টা ৫০ মিনিটে উপাচার্যের ভবনের সামনে থেকে র‌্যালি বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন চুয়েটের উপচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। র‌্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রী, নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে দেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি তুলে ধরেন। পরে উপস্থিত নারীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের কেক কাটা হয়।