রাজধানীর সুখনগরের মান্ডা খাল দখল-দূষণের শিকার। গতকাল আমাদের সময়ের প্রতিবেদনে যে চিত্র উঠে এসেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। খালটি একটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আর পাড় ঘিরে অবৈধ স্থাপনা তো আছেই। কৌশলে যার যার বাড়ি বা জায়গার পাশে খালের এলাকা দখল করেছেন। এসবই হচ্ছে প্রকাশ্যে।
শুধু মান্ডা খাল নয়, সারাদেশের এ রকম অনেক খাল, নদী দখলদারদের কবলে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। খাল ও নদীর তীরে স্থাপিত শিল্পকারখানার বর্জ্যে বিষাক্ত হচ্ছে পানি। অন্যদিকে তীর দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় সংকুচিত হচ্ছে সেগুলো। ২০০০ সালে প্রণীত ‘প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন’ অনুযায়ী নদী, খাল, বিল, দিঘি, ঝরনা বা জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ এলাকা এবং বৃষ্টির পানি ধারণ করে, এমন কোনো ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। অর্থাৎ সেগুলো ভরাট করা যাবে না। আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় না।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় খাল-নদী রক্ষা করার কেউ নেই। যে যার ক্ষমতা অনুযায়ী খাল ও নদী ব্যবহার করছে। যাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে, তারা নদী ও খালের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। পরিবেশ-প্রতিবেশ কিংবা সমাজের দশজনের ক্ষতির পরোয়া করছে না। তবে আশার কথা হচ্ছে, বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচির ফলে অনেক খাল ও নদী দখলমুক্ত হয়েছে।
মান্ডা খাল উদ্ধারের জন্য পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোই শুধু নয়, সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে, আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে যথাযথ উদ্যোগ নিয়ে এই খাল দখলমুক্ত করা।