সড়কে ঝরল ২০ প্রাণ
সারাদেশে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। তা কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনা না হওয়াটাই যেন এক অলৌকিক বিষয়। গতকাল আমাদের সময়ের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে- দেশের বিভিন্ন স্থানে বেপরোয়া গতির বাস, ট্রাক, ট্রাক্টর ও মোটরসাইকেলে সড়কে প্রাণ গেছে ২০ জনের। তাদের মধ্যে ভোলার দৌলতখানে ৪ জন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও পিরোজপুরে ৩ জন করে এবং রাজধানীর ডেমরা, সিরাজগঞ্জ, কক্সবাজার, টাঙ্গাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর ১ জন করে নিহত হন। এ ছাড়া রাঙামাটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ জন করে নিহত হন।
সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, গত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনার সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ২০২২ সালে। সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন উল্লেখ করেছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন এবং কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন অসতর্কতার কারণেই এভাবে প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু কিংবা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এটি বলার অপেক্ষা রাখে না, দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যেভাবে একের এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যেন এটি একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষকে প্রয়োজনে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে হয়, যানবাহনে চড়তে হয়। চলার পথেই আর কত মানুষের এভাবে মৃত্যু হবে! আমরা কি কোনোভাবেই প্রতিরোধ করতে পারব না? যখন গাড়ির গতি বৃদ্ধি ছাড়াও মহাসড়কে বড় যানবাহনের সঙ্গে ছোট যানবাহন চলার কারণে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ আসছে, তখন এ বিষয়টি বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে দ্রুত। দুর্ঘটনার নেপথ্যের কারণগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে ওই অনুযায়ী নিতে হবে সুষ্ঠু পদক্ষেপ। বিচারহীন, প্রতিকারহীন অবস্থায় কোনো কিছু চলতে থাকলে এর পুনরাবৃত্তি তো ঘটবেই। তাই দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবার আগে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নিয়েই ভাবতে হবে।