বৈদেশিক মুদ্রার হাতছানি
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়ায় ১৩ হাজার ৩২০ কেজি গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল তরমুজ রপ্তানি করেছে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান সাত্তার ইন্টারন্যাশনাল। এ ফল রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি আয় হবে প্রায় চার হাজার ডলার। গত শুক্রবার রাতে এসব তরমুজ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে করে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। প্রথম চালান সফলতা পেলে দেশে উৎপাদিত এ ফল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। দেশে আসবে বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে তরমুজের উৎপাদন হয়েছিল ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। এর আগের অর্থবছরে (২০২০-২১) উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আড়াই লাখ টন তরমুজ
উৎপাদন হয়। কয়েক বছর ধরে দেশে ধারাবাহিকভাবে তরমুজের ফলন বাড়ছে।
তরমুজ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে শীর্ষ রয়েছে স্পেন ও মরক্কো। আমদানিকারকের তালিকায় রয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো। এসব দেশে প্রতিবছর ৭৭ লাখ টন তরমুজ রপ্তানি হয়। বিশ্বে ফলটির বাজার রয়েছে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের।
চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান সাত্তার ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার আবদুল কাইয়ুম আমাদের সময়কে বলেন, প্রাথমিকভাবে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্তান গ্রামের দুই কৃষক জাকির ফরাজি ও মুকুল মিয়ার ক্ষেতে উৎপাদিত মোট ১৩ হাজার ৩২০ কেজি তরমুজ সংগ্রহ করে রপ্তানি করেছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে শুক্রবার চালানটি মালয়েশিয়ায় পাঠানোর জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে করে জাহাজিকরণ করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে চালানটি সে দেশে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, দেশে তরমুজের ফলন বাড়ছে। অপ্রচলিত এই পণ্য রপ্তানির বাজার ধরা গেলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংঘনিরোধ কেন্দ্রের সংঘনিরোধ রোগতত্ত্ববিদ সৈয়দ মুনিরুল হক বলেন, দেশে এখন আমাদের চাহিদার চেয়ে বেশি তরমুজ উৎপাদন হচ্ছে। এসব তরমুজ যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন, যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে তরমুজ রপ্তানির প্রথম চালান মালয়েশিয়ায় গেছে। এর আগে কখনো এ ফল সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়নি। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো তরমুজ রপ্তানি হয়েছে, এটি অত্যন্ত সুখবর। দেশে উৎপাদিত তরমুজ এভাবে বিদেশে রপ্তানি করা গেলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।