advertisement
advertisement
advertisement

রমজানে চোখ ন্যায্য দামে

টাস্কফোর্সের সভা আজ

আবু আলী
১৯ মার্চ ২০২৩ ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৮ এএম
advertisement

রমজানে নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সেদিকে নজর দিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে নিত্যপণ্যের ‘ন্যায্য’ দাম নিশ্চিত করতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পণ্যের সরবরাহ, মজুদ ও অস্বাভাবিকভাবে কেউ যেন দাম বাড়াতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও কাজ করবে।

এসব বিষয় নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনাসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা হবে। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সভাপতিত্ব করবেন। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন, ভোক্তা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সভায় আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ, সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার ওপর সর্বোচ্চ জোর দেওয়া হবে।

advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডলার সংকটে এলসি (ঋণপত্র) করতে না পারায় এবার ভোগ্যপণ্যের আমদানি কমেছে। দাম বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ বাজারে আমদানি করা পণ্যের চাহিদাও অবশ্য কিছুটা কমেছে।

তবে ইফতারের খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত পণ্য, যেমনÑ চিনি, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, ছোলা, খেজুর, পেঁয়াজ ও আটার দাম অনেক বেশি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ-মাংসও। তবে মসুর ডাল, সরিষা ও পেঁয়াজের স্থানীয় উৎপাদন মৌসুম সদ্য শেষ হওয়ায় এগুলোর সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শাকসবজির দাম ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। আগেরবারের তুলনায় গত ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ২০ লাখ টন গম আমদানি কম হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাবে বাজারে সব ধরনের আটা ও ময়দার দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আটা মানভেদে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

advertisement

দেশে ২৫ লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রমজানেই চাহিদা থাকে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টন। দেশে উৎপাদন হয় ৩৫ লাখ টন। কিন্তু সংরক্ষণ করতে না পারায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়। ফলে আমদানি করা হয় ৬ থেকে ৭ লাখ টন।

দেশে ২০ লাখ টন সয়াবিন তেলের চাহিদা রয়েছে। রমজানে চাহিদা থাকে আড়াই থেকে তিন টনের। আমদানি করা হয় ২০ লাখ টন। অপরিশোধিত তেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারকে বিবেচনায় নিয়ে আমদানি পর্যায়ে ১০ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দেশে ২০ লাখ টন অপরিশোধিত চিনির চাহিদা রয়েছে। রমাজানেই প্রয়োজন তিন লাখ টন। আমদানি হয় ২২ লাখ টন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ‘স্পেসিফিক ডিউটি’ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২৫ শতাংশ।

ছোলার চাহিদা রয়েছে এক লাখ টন। রোজায় চাহিদা থাকে ৮০ হাজার টন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় ৬ হাজার টন। আমাদনি হয় দেড় লাখ টন। ছোলা আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই। দেশে ৮০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রমজানেই চাহিদা থাকে ৫০ হাজার টনের। বছরে ১ লাখ টন আমদানি করা হয়। খেজুর আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই।

এবার রমজানের আগে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, গত রমজানের তুলনায় এবার পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ বাড়বে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ আমাদের সময়কে বলেন, দেশে ভোগ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। চিনির কিছুটা সংকট ছিল। সে সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরবাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের মধ্যে সুলভমূল্যে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া অনিয়ম বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।