পবনা জেলার ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৮ শিক্ষক-কর্মচারীকে একযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করেছেন প্রধান শিক্ষক। বাড়ানো বেতনের ২০০ টাকা না নেওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদীতে বাঘইল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৮ শিক্ষক-কর্মচারীকে এই শোকজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নোটিশ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ও সভাপতির অনুমতি ছাড়াই ২২ মার্চ প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ১৮ জনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। একযোগে এতজনের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ দেখে তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন। তবে কেউ এ নোটিশ গ্রহণ করেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর বেতন মাথাপিছু ২০ টাকা হারে বাড়ান হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ালে শিক্ষকদেরও সম্মানি বাড়ান দাবি জানান তারা। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের মতবিরোধ চলছিল। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সবশেষ বৈঠকে শিক্ষক-কর্মচারীদের সম্মানি ২০০ টাকা হারে বাড়ান হয়। কিন্তু জানুয়ারী মাস থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা তা গ্রহণ করেননি।
তাদের অভিযোগ, খাতা কলমে কয়েক মাস আগে থেকে শিক্ষকদের সম্মানি বাড়ানো হয়েছে এমন দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের চাপে রাখতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীকে বাদ রেখে বাকিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। খাতা কলমে শিক্ষকদের সম্মানি বাড়ানো হয়েছে দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের শোকজ করা হয়নি। শুধু চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে কেনো তারা নির্ধারিত সম্মানি নেননি। তবে শিক্ষকরা সে চিঠি গ্রহণ না করে বিষয়টিকে এখন শোকজ বলে প্রচার করছেন।
পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া নিজ উদ্যোগে শিক্ষকদের এমন লিখিত কারণ দর্শানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম পরিচালনা পরিষদের আগামী বৈঠকের আগে যেনো সঠিক কারণ তুলে ধরতে পারি। এ জন্য সবাইকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলেছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী সব শিক্ষকদের কাছে শোকজের বিষয়টি জেনেছি। বিদ্যালয়ের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।