থাকবে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিল ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম
পবিত্র রমজান শেষে অনুষ্ঠিত হবে উপনির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন। বছরের শেষের দিকে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে। এসবের প্রস্তুতিতে সময় নষ্ট করতে নারাজ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। রমজানে বেশ কিছু কাজ গুছিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। প্রতিটি এলাকায় ইফতার মাহফিল আয়োজন ছাড়াও জেলা-উপজেলা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। লিখিত কোনো নির্দেশনা না থাকলেও এসব বিষয় মাথায় রেখে কাজ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলে যে গঠনতন্ত্র অনুমোদন হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, কোনো জেলা ও উপজেলায় সম্মেলনের ৫৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে। সম্মেলন করতে ব্যর্থ হলে প্রথমে শোকজ এবং তাতে সঠিক জবাব পাওয়া না গেলে কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশনা আছে।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দলের জাতীয় সম্মেলন হয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত দুটি বা তিনটি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। নানাবিধ কারণ দেখিয়ে অন্য কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার কাজ পেছানো হয়েছে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় নেতারা বলছেন, এ মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শেষ করা হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা
বলছেন, বিগত বছরে করোনা মহামারীর সময়ে মানুষ ঘরে আটকা থেকেছে। সেই সময়ে ঝুঁকি নিয়ে একমাত্র আওয়ামী লীগ নেতারাই তাদের পাশে থেকেছেন। এবারে মানুষের কাছে গেলে তাদের সেটা মনে পড়বে। যদিও এগুলো মনে করিয়ে দিতে আওয়ামী লীগ কাজ করবে না। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও দলীয় দায়িত্ববোধ থেকেই মানুষের পাশে যাবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি নির্বাচনমুখী ও জনমুখী দল। মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, তাদের কষ্ট বোঝাÑ এটাই আমাদের রাজনীতি। সুতরাং রমজানকে উপলক্ষ করে বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের কাছে যাওয়া সুযোগ তৈরি হবে এবং আমরা যাব। এটাই এ মাসে আমাদের বড় কর্মসূচি।’
খুলনা বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা দেওয়ার আগেই নানা ও জেলা পর্যায় থেকে আমাকে ইফতার অনুষ্ঠানের দাওয়া দিচ্ছেন স্থানীয় নেতারা। একই সঙ্গে চলবে দলীয় কার্যক্রম। সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে, চলবে রমজান মাসেও।’
রাজশাহী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ‘সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে, চলবে। প্রতিটি ওয়ার্ড ইউনিটে ইফতার কার্যক্রম হবে।’
চট্টগ্রাম বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন আমাদের সময়কে বলেন, ‘পবিত্র সিয়াম সাধনার মাসে ইবাদতের পাশাপাশি ইফতার মাহফিল, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন, সম্মেলন সম্পন্ন হওয়া ইউনিটগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
ময়মনসিংহ বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘যেসব জেলা-উপজেলার সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজটি শেষ করা হবে।’
এ ছাড়া সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো ইফতারের আয়োজন করবে। এসব আয়োজনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও বিষয়ভিত্তিক কমিটির নেতারা উপস্থিত থাকবেন। শরিক দলগুলোর ইফতারে যাওয়া ও তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানা গেছে। তবে ইফতারের নামে কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও কেন্দ্র থেকে হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।