advertisement
advertisement
advertisement.

রমজানে খাবারের দাম বাড়লেও মান বাড়েনি, দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫১ পিএম | আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৮:৫৬ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
advertisement..

পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ৪০ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কোনো বিভাগ চাইলেই পরীক্ষা নিতে পারবে এমন নির্দেশনাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অনেকগুলো বিভাগের পরীক্ষা চলমান থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা থাকছে আবাসিক হলগুলো। কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা ও টিউশনির কারণে অনেক শিক্ষার্থী রমজানে হলে থেকে গেছেন।

সেই হিসেবে এবার ক্যাম্পাসের হল গুলোতে তুলনামূলক বেশি শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। তবে এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত সেহরির। অন্য মাসগুলোতে হলে খাবার নিয়ে নানা অভিযোগ থাকলেও, সবার আশা ছিল রমজান মাস উপলক্ষে তারা ভালো খাবার পাবে। কিন্তু খাবারের দাম বাড়ালেও, বাড়েনি খাবারের মান।

advertisement

ইবির বিভিন্ন হলে গিয়ে দেখা যায় রাতের খাবারের মূল্য আগের মতো থাকলেও সেহরিতে রাতের একই খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে কিন্তু রাতের তুলনায় সেহরিতে খাবারের দাম যোগ হয়েছে আরও পাঁচ থেকে দশ টাকা। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীর ভোগান্তি বাড়ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা দিয়ে জিয়া মোড়ের দোকানগুলোতে খাবার খাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলে খাবারের নিয়মিত দামের চেয়েও ১২ টাকা বৃদ্ধি করে ৫০ টাকা দামে সেহরি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু দাম বাড়লেও ন্যূনতম মান বাড়েনি খাবারের।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘৩৮ টাকার খাবার ৫০ টাকায় বিক্রি করা হলেও ন্যূনতম গুণগত মান বাড়েনি। এই খাবারে সেহরি খেয়ে সারাদিন রোযা থাকা কষ্টের।’

সরেজমিনে সাদ্দাম হলে গিয়ে দেখা যায়, সাদ্দাম হোসেন হলে ২৮টাকার খাবারের দাম বাড়িয়ে ৪০টাকা করা হয়েছে। ৩৮ টাকার খাবারের দাম বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬০ টাকা। কিন্তু খাবারের ন্যূনতম মান বাড়েনি।

সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোতালেব বিশ্বাস বলেন, ‘আগের মাসের তুলনায় রমজানে হলের খাবারের দাম বৃদ্ধি করলেও খাবারের মান আহামরি বাড়েনি। এতে করে আমরা আগের তুলনায় বাড়তি মূল্য দিলেও পাচ্ছি না মানসম্মত সেহরি।’

সেহরির খাওয়ার সময়ে হলগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ভালো খাবারের সন্ধানে এক হল থেকে আরেক হলের দিকে ছোটাছুটি করছে শিক্ষার্থীরা। সাদ্দাম হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা যায় লালন শাহ হলের দিকে আবার শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে সাদ্দাম হোসেন হলের দিকে। এভাবে শিক্ষার্থীরা ভালো খাবারের খোঁজে হল পরিবর্তন করে খুঁজছে মানসম্মত সেহরি।

তবে কিছু হলে খাবারের মান কিছুটা ভালো হলেও সেটা বিক্রি হচ্ছে সত্তর টাকা থেকে নব্বই টাকার মধ্যে, যা সাধারণ দামের তুলনায় অনেক বেশি।

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, ‘জিয়া হলে কয়কদিন থেকে খাচ্ছি, খাবারের মান ভাল না হওয়াতে লালন শাহ হলে যাচ্ছি। খাবারের মান ভালো না হওয়ায় সেখানেও খেয়ে মজা পাচ্ছি না। বাড়তি টাকা লাগলেও মনের মতো খাবার পাচ্ছি না। তাই নিজ হল রেখে অন্য হল ও দোকানগুলোতে ছুটতে হচ্ছে ভালো খাবারের খোঁজে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়েদের হলে একই অবস্থা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুসরাত রাসা বলেন, ‘রমজানে বাড়ি যাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু ক্লাস-পরিক্ষা থাকার কারণে যেতে পারছিনা। হলে অন্য কোনো সমস্যা নাই। তবে এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে হলের সাহরি খেয়ে রোজা রাখা। ডাইনিং এ খুব বাজে খাবার দেওয়া হচ্ছে।’

খাবারের দামের বিষয়ে শেখ রাসেল হলের ডাইনিং ম্যানেজার বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। অন্য মাসের তুলনায় রমজানে খাবারের মান ভাল করা হয়েছে। এজন্যই দাম একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।’