গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
দেশে ক্রমাগত ঘটছে খুনের ঘটনা। রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব-কলহের কারণে অবলীলায় খুন হচ্ছে মানুষ। স্বার্থের কারণে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে হত্যাকাণ্ড। গতকাল আমাদের সময়ের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় সুমা আক্তার রহিমা নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের সমাজে এখনো যৌতুকের নামে নারী নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। যৌতুকের কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো নারী নিগৃহীত হচ্ছেন। দেশে যৌতুকবিরোধী কড়া আইন থাকা সত্ত্বেও বন্ধ করা যাচ্ছে না এই ঘৃণ্য প্রথা। যৌতুকের বলি হয়ে দেশে প্রতিবছর অনেক নারী প্রাণ হারিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। পারিবারিক বিরোধে কখনো কখনো প্রতিপক্ষকে জব্দ করার জন্যও যৌতুক আইনের অপব্যবহার করা হয়। যৌতুকবিরোধী আইনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকা সত্ত্বেও তা যৌতুকলোভীদের সামাল দিতে পারছে না সামাজিক সচেতনতার অভাবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন কার্যকর রয়েছে, প্রভাবশালী বিবেচনায় ছাড় পেয়ে যায়। অপরাধী যত বড় শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান হোক তারা যেন কোনোভাবেই ছাড় পেয়ে না যায়। দেশ ও জাতির স্বার্থে যৌতুকের কারণে নারী নির্যাতনের এই চিত্রের অবসান জরুরি। যৌতুকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে যৌতুকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে সামাজিকভাবে যৌতুককে বয়কট করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তা হলে এ রকম ভিক্ষাবৃত্তি মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে সমাজ। প্রতিটি ঘটনায় বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। উপরোক্ত ঘটনার ঘাতক স্বামী রফিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে কঠিন শাস্তি দিতে হবে।