advertisement
advertisement
advertisement.

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ মার্চ ২০২৩ ০১:৫০ পিএম | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০২:২২ পিএম
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের লোগো
advertisement..

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের, পত্রিকাটির নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।

advertisement

বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম চরম দুর্দিন অতিক্রম করছে। সরকার, সরকারি দল, আমলাতন্ত্র এবং প্রভাবশালী মহল গণমাধ্যমের কন্ঠরোধে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। সাংবাদিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার, সাংবাদিক হত্যা, ঠুনকো অজুহাতে গণমাধ্যম বন্ধ করে দেয়া এখন নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় অন্তত ৫৪ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। এক দশক পেরিয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের বিচারতো দূরে থাক, তদন্তেও অগ্রগতি নেই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেত কড়া সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এই আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ চলছে। এই আইনে অভিযুক্তরা যখন আদালতে যাচ্ছেন, তখন তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। নিপীড়নমূলক এই আইনের ১৪টি ধারাই যেহেতু জামিন অযোগ্য, তাই এটা একটা সাংঘাতিক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে। নিপীড়নমূলক এই আইনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাজার বিধান রাখা হয়েছে ১৪ বছর। আমাদের দেশে মৃত্যুদণ্ড বাদ দিলে কোনো খুনির সাজা হয় ১৪ বছর। সাংবাদিকদের অপরাধ কি এতো জঘন্য যে তাকে খুনের মামলার আসামির সমান সাজা দিতে হবে?’

‘আমরা মনেকরি, এসব করা হচ্ছে সাংবাদিকদের কলম ও নাগরিকদের কন্ঠ থামিয়ে দেয়ার জন্য। যাতে সরকারের গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট ও ব্যর্থতার কথা গণমাধ্যম প্রকাশ করতে না পারে এবং এ নিয়ে বিরোধী দল প্রতিবাদ বা সমালোচনা করতে না পারে।’

বিবৃতিতে পেশাজীবীদের শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, ‘সমালোচনার সীমারেখা এতটাই টেনে দেয়া হয়েছে যে, সমালোচনার সময় কয়েক ব্যক্তির নাম ভুলেও মুখে বা কলমে আনা যাবে না। তারা যতই অপকর্ম বা ভুল করুক সমালোচনা করা যাবে না। তাদের সমালোচনা মানেই জেলে যেতে হবে না হয় নির্যাতিত হতে হবে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুদ্দীন মোস্তাফা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।’

মিডিয়ার কণ্ঠরোধ সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার পাশাপাশি বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, নামামুখী চাপ এবং বিধিনিষেধের বেড়াজালে সাংবিধানিক এ অধিকার মলাটবদ্ধ নথিতে রুপান্তরিত হয়েছে।’

বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং সরকারকে নিপীড়নের পথ পরিত্যাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়।