নামাজ অবশ্য পালনীয় ইবাদত। নামাজ যেমন পরিহারের সুযোগ নেই তেমন গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ ছাড়া নামাজের জামাতে শামিল না হওয়ার সুযোগও নেই। রসুল (সা.) জামাতে নামাজ পড়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তা প্রায় বাধ্যবাধকতার শামিল। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেন, ‘আজান শোনার পর কোনো ওজর না থাকা সত্ত্বেও যে লোক নামাজের জামাতে শামিল হয় না তার ঘরে বসে একাকী পড়া নামাজ মঞ্জুর হবে না।
’ জানতে চাওয়া হলো, ইয়া রসুলুল্লাহ! ওজর বলতে কী বোঝায়? তিনি বললেন, ‘বিপদাশঙ্কা অথবা রোগব্যাধি। ’ আবু দাউদ, ইবনে হেব্বান ও ইবনে মাজা।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন : (১) যে লোক জনগণের অপছন্দ সত্ত্বেও তাদের নেতা হয়ে বসে (২) যে নারী তার ওপর স্বামী অসন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় রাতযাপন করে (৩) নামাজের আজান ও কল্যাণের আহ্বান শুনেও যে লোক জামাতে শামিল হয় না। ’ হাকেম।
হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘মসজিদের প্রতিবেশীর নামাজ মসজিদ ছাড়া দুরস্ত হবে না। ’ প্রশ্ন করা হলো : মসজিদের প্রতিবেশী কে? তিনি বললেন, ‘বাড়িতে বসে যে আজান শুনতে পায়। ’ মুসনাদে আহমদ।
বুখারিতে বর্ণিত আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন যে লোক মুসলমান হিসেবে আল্লাহর দিদার লাভ করতে চায় সে যেন প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে। কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়েতের বিধানাবলি প্রবর্তন করে দিয়েছেন। আর এ নামাজগুলো হচ্ছে হেদায়াতের অন্যতম পন্থা। অনেকের মতো তোমরাও যদি আপন ঘরে বসে নামাজ পড় তবে তোমাদের নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর তোমরা যদি নবীর পথ বর্জন কর তবে গোমরাহিতে নিপতিত হবে। আমার জানা মতে মুনাফিক বা অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া কেউ জামাতে শামিল হতে পিছপা হয় না। অথচ যে লোক দুজনের কাঁধে ভর দিয়ে কাতারে দাঁড়ায় অথবা মসজিদ পর্যন্ত আসে, অবশ্যই সে জামাতে নামাজের জন্য আসে। ’ পক্ষাঘাতে অসুস্থ রবি বিন খায়সাম দুই লোকের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদে এসে জামাতে শামিল হতেন। তাকে বলা হতো, আপনি তো মাজুর, আপনার ঘরে বসে নামাজ পড়া তো বৈধ। তিনি বলতেন, ‘তা কীভাবে হয়? আমি তো নামাজের আহ্বান শুনতে পাই। কাজেই যার সাড়া দেওয়ার সামর্থ্য আছে, হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাকে তাতে সাড়া দিতেই হবে। ’