পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তারের পর সৃষ্ট সহিংসতার প্রেক্ষাপটে তার দল পিটিআইয়ের দুই ডজনের বেশি নেতা পদত্যাগ করেছেন। কয়েকজন নেতা দলের ‘সেনা বিরোধী’ অবস্থানের কারণে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু ইমরান খান দাবি করেন, তার দলের নেতাদের চাপ প্রয়োগ করে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। গত বুধবার লাহোরে নিজ বাসভবন থেকে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় এমন দাবি করেন। খবর আল জাজিরা।
কয়েক দিনের ব্যবধানে পিটিআইয়ের মুখপাত্র এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দল ছেড়েছেন। আর দলের মহাসচিব ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর বলেছেন, তিনি দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন, কিন্তু পিটিআইয়ের সঙ্গেই থাকবেন। গত মঙ্গলবার পিটিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট শিরিন মাজারি দলের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পর ফাওয়াদ চৌধুরী ও আসাদ উমরের ঘোষণাগুলো আসে। ইমরান খান গ্রেপ্তারের পর এই তিন নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বের হয়ে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এমন প্রেক্ষাপটে ইমরান খান ভিডিওবার্তায় বলেন, এমন দমন-পীড়ন পাকিস্তানের ইতিহাসে দেখিনি। যদি বলেন, আপনারা পিটিআইয়ের সদস্য, তা হলে আপনাদের দমন-পীড়ন এবং সহিংসতার কবলে পড়তে হবে। বন্দি করা হবে। আর যদি সে জাদুকরী শব্দগুলো বলেন যে আমরা আর পিটিআইয়ের সঙ্গে নেই, তা হলে ছাড়া পাবেন। ইমরান আরও বলেন, শুধু উচ্চপর্যায়ের নেতাই নন, তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদেরও হেনস্তা করা হচ্ছে। ইমরানের ভাষায়, তারা সবাইকে জেলে পাঠাচ্ছে। এখন কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে সেটিও আমি জানি না। এদিকে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলো জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে ইমরান খানের গ্রেপ্তার কেন্দ্র করে সড়কে বিক্ষোভ-সহিংসতার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) হাজারও কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে। ইমরান খান সাম্প্রতিক মাসগুলোয় রাজপথে ব্যাপক সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসছেন। এর মধ্যে কয়েক দফা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায় সরকার। অবশেষে গ্রেপ্তারের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাকে আবারও জামিন দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। এর মধ্যেই একের পর এক নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছেন। গ্রেপ্তারের পর ইমরান, এর জন্য দেশটির সেনাপ্রধানকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন।