advertisement
advertisement
advertisement.

খেলাপি ঋণ আদায়ে সফল হতেই হবে

ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা

২৬ মে ২০২৩ ১২:০০ এএম
আপডেট: ২৫ মে ২০২৩ ১১:৫২ পিএম
advertisement..

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বড় সংকট হলো খেলাপি ঋণ। এটি বাড়তে বাড়তে লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ওয়াকিবহাল মহল বলেন, আদতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি। দুদিন আগে ব্যাংকারদের সমিতি এবিবির (অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স অব বাংলাদেশ) পক্ষ থেকে খেলাপি ঋণকেই এ খাতের বড় দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে এর দায় তারা মূলত ব্যাংকের পর্ষদের ওপর চাপিয়ে নিজেদের দায়মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। এদিকে গত বুধবার আরেক সেমিনারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর স্পষ্টভাবেই বলেছেন, এ দায় ব্যাংকের এমডি বা সিইও এবং সংশ্লিষ্টরা এড়াতে পারেন না। মূল দায় অবশ্যই তাদের, তবে সেই সঙ্গে ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ী-কাম-রাজনীতিকদের নিয়ে গঠিত ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের চাপের কথা সবাই জানেন। তাদের অধীনে চাকরিরত কোনো এমডি বা সিইওর পক্ষে পর্ষদের অন্যায় আবদারের চাপ সামলানো কঠিনই হয়ে ওঠে। অথচ অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে খেলাপি ঋণ আদায়ের বিকল্প নেই। আর এ কাজ করতে হবে শীর্ষ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ব্যাংকটিকেই।

অনেকেই মনে করছেন ব্যাংকের সেবা খাতের সব কাজ ডিজিটাল বা অনলাইনে সম্পন্ন হলে তথ্য গোপন বা গোপনে বেআইনি কাজ করা কঠিন হবে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো পরস্পরের কাছ থেকে অবাধে ঋণ গ্রহণ করেন যা পারস্পরিক যোগসাজশে খেলাপি হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির বাইরে। তা ছাড়া শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর ব্যাংক মালিকদের চাপ কোন পর্যায়ে যায় তার নজির তো একাধিক ব্যাংকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনায় প্রকাশ পেয়েছে। এটাও পরিষ্কার যে, দেশের যেসব রাজনীতিক-ব্যবসায়ী ব্যাংক মালিক তারা স্বেচ্ছায় ব্যাংকের কাজকর্মে স্বচ্ছতা আনতে দেবেন না। অন্তত অনেকেই নিজেদের অপকর্ম ঢেকে রাখার ব্যাপারে যে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগে দ্বিধা করবেন না। ফলে বাংলাদেশে ব্যবস্থার মধ্যেই সমাধান রাখতে হবে। সেদিক থেকে অনলাইন ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্বক্ষণিক নজরদারির কোনো বিকল্প নেই।

advertisement

বর্তমানে দেশ আর্থিক সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী কোম্পানির উৎপাদন ও রপ্তানি আয় তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমেছে। এটি মোটামুটি আগামী প্রান্তিকেরও নির্দেশক বলে ভাবা যায়। এর মধ্যে সরকারকে আগামী অর্থবছরের বাজেট দিতে হবে এবং তা দিতে হবে বছরান্তের জাতীয় নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে। গত ১৪ বছরের মধ্যে সরকার এখনই সবচেয়ে চাপে রয়েছে। গত দুটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলায় সরকার এখন সেদিক থেকেও দেশে-বিদেশে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। এত চাপ সামলে সামনের নির্বাচনে ভালো ফল করে ক্ষমতায় ফিরতে হলে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আশা করি সব দিক বিবেচনা করে সরকার যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ভুল করবে না।