কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ও তার ছিঁড়ে কয়েকটি এলাকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়লে চাপাপড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ২০ মিনিট ধরে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীতে ঘরবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে শহর ও গ্রামগঞ্জে সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গভীর রাতে প্রায় ছয় ঘণ্টা কাজ করার পর ভোররাতে বিদ্যুৎ লাইন সচল হয়।
এদিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের অদূরে তালবাড়ীয়া নামক স্থানে পদ্মায় বালুবোঝাই একটি ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। পরে ট্রলারের পাঁচ থেকে ছয় শ্রমিক সাঁতরিয়ে তীরে আসেন।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসান জানান, দুই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টিসহ ঝড়ে ঘরবাড়ি ও গাছপালাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার রাতের ঝড়ে গাড়লগাঁতী গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ওই গ্রামের প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বটগাছটি ভেঙে গেছে। এছাড়া ঝিকিড়া, নেওয়ারগাছা, ঘোষগাঁতী, শ্রীকোলা, চালা, পূর্বদেলুয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি এবং গাছপালাসহ বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে।
সলপ ইউপি চেয়ারম্যান শওকাত ওসমান জানান, তার এলাকায় অনেকের বসতঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু সালেহ জানান, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ও হেলে গেছে। এছাড়া তার ছিঁড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ৩০টি দলে বিভক্ত হয়ে বিদ্যুৎ কর্মীরা কাজ করছেন।
কালিহাতী (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে কাজুলী (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কালিহাতী পৌরসভার সালেংকা চকপাড়া শ্মশান ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের নরহরী চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুশিলার বোন।
স্থানীয়রা জানান, ঝড়ের সময় পরিবারের সদস্যরা ঘরেই ছিলেন। রাত ১০টার দিকে পাশের একটি গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে। এতে কাজুলী মারা যান। এছাড়াও ঝড়ে ওই গ্রামের ১০ থেকে ১২টি ঘর ভেঙে গেছে।
মৃতের বড় বোন সুশিলা বলেন, কাজুলীর স্বামী তাকে ভরণপোষণ না দেওয়ায় প্রায় দুই বছর ধরে তার ছেলে ও ছেলের বউ নিয়ে আমাগো বাড়িতেই থাকতেন। এর আগে কাজুলী ৩ থেকে ৪ বছর জর্দান ছিল। দুই-তিন দিন পর এবার তার মরিশাস যাওয়ার কথা ছিল। সে দেশের ভিসাও আসছিল।
কালিহাতী ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন মোড়ল বলেন, রাত সাড়ে ১০টায় খবর পেয়ে দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিটের প্রচেষ্টায় একটি গাছের নিচ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।