সদ্যোজাত শিশু ও গর্ভবতী নারীসহ প্রায় পাঁচশ আশ্রয়প্রার্থী ভূমধ্যসাগরের মধ্যাঞ্চলে হারিয়ে গেছে বলে খবর দিয়েছে দুটি মানবিক সংস্থা। গতকাল শুক্রবার অ্যালার্ম ফোন নামে একটি সংস্থা জানায়, গত বুধবার ওই নৌকাটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সংস্থাটি বিপদে পড়া নৌকার কাছ থেকে বিপদ সংকেত সংগ্রহ করে থাকে। খবর আল জাজিরার।
অ্যালার্ম ফোন জানিয়েছে, নৌকাটির সঙ্গে যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন উত্তাল সমুদ্রে তাদের ইঞ্জিন বিকল ছিল। নৌকাটি তখন লিবিয়ার বেনগাজি বন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং মাল্টা থেকে ও ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় সিসিলি দ্বীপ থেকে চারশ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
ইতালীয় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ইমার্জেন্সি গত বৃহস্পতিবার জানায়, ওই নৌকাটির সন্ধানে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এবং আরেক দাতব্য জাহাজ ওসান ভাইকিং তল্লাশি চালিয়ে গেলেও নৌকাটির কোনো চিহ্ন কিংবা ধ্বংসাবশেষ পায়নি।
ইমার্জেন্সির এক মুখপাত্র শুক্রবার জানিয়েছে, তল্লাশি চলছে। তাদের ধারণা নৌকাটির আরোহীদের হয়তো অন্য কোনো জাহাজ উদ্ধার করেছে কিংবা তারা হয়তো ইঞ্জিন সচল করে সিসিলির দিকে যাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
বৃহস্পতিবার ইতালীয় কোস্টগার্ড জানায়, তারা পৃথক দুটি অভিযানে ৪২৩ ও ৬৭১ জনকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেছে। তবে এসব ঘটনার সঙ্গে নিখোঁজ নৌকার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি অ্যালার্ম ফোন।
এদিকে পৃথক আরেক ঘটনায় জার্মান দাতব্য প্রতিষ্ঠান এসওএস হিউমানিটি
জানিয়েছে, একটি তেলের ট্যাংকার সমুদ্র থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করে অবৈধভাবে লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীদের এমন কোনো দেশে জোর করে পাঠানো যাবে না, যেখানে তারা কঠোর আচরণ এবং শরণার্থী নিপীড়নের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। আর এসব নিপীড়নের খবর লিবিয়ায় খুবই স্বাভাবিক। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত ট্যাংকারের কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
অভিবাসী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় সরকারগুলো ক্রমে কঠোর হয়ে উঠছে। তারপরও ইতালিসহ এসব দেশে সমুদ্রপথে অভিবাসী পৌঁছানো অব্যাহত রয়েছে। এই বছর এখন পর্যন্ত নৌকায় করে ৪৭ হাজারের বেশি অভিবাসী পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ হাজার বেশি।